চিয়া সিড খেলে কি হয়


 সূচিপত্রঃচিয়া সিড হলো এক ধরনের বীজ যা চিয়া নামক উদ্ভিদ হতে পাওয়া যায়। চিয়া সিড অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি বীজ। খাদ্য তালিকায় একে সুপার ফুড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট সহ নানাবিধ পুষ্টি উপাদান।




    চিয়া সিড খাবার উপকারিতা

    হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষাঃ
    চিয়া সিড ব্যবহারের অন্যতম সুবিধা হলো এই বীজে থাকা উচ্চ ফাইবার হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
    এছাড়া এ বীজে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
    তাই হার্ট ভালো রাখতে হলে আমাদের নিয়মিত চিয়া বীজ খাওয়া উচিত।

    কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধঃ
    চিয়া বীজে রয়েছে অদ্রবণীয় ফাইবারের উচ্চ অনুপাত, যা মল নরম করে থাকে এবং নিয়মিত মলত্যাগে সহায়তা করে। এছাড়া চিয়া বীজ হজমে সহায়তা করার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে আমাদের নিয়মিত চিয়া সিড খাওয়া উচিত।

    ওজন নিয়ন্ত্রণঃ
    ওজন নিয়ন্ত্রণে চিয়া বীজ অনবদ্য ভূমিকা পালন করে।চিয়া বীজে থাকা ফাইবার,প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে।সম্ভাব্য ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা কমিয়ে ক্ষুদা নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে যা দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

    ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণঃ
    চিয়া সিড ব্যবহারে রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে এতে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
    চিয়া বীজের দ্রবণীয় কার্বোহাইড্রেট হজম এবং শোষণ স্লো করে দেয় যার ফলে রক্তে শর্করা মাত্রা বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে,চিয়া বীজ ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারে যার ফলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

    হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষাঃ
    চিয়া বীজে রয়েছে ক্যালসিয়াম ফসফরাস ম্যাগনেসিয়াম এবং বিভিন্ন খনিজ উপাদান যা হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই খনিজ গুলি শক্তিশালী হাড় বজায় রাখতে সহায়তা করে। হাড়ের বিভিন্ন প্রকার ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি হ্রাস করে।

    চিয়া সিড কখন খাবেন

    চিয়া সিড বিভিন্ন সময়ে খাওয়া যেতে পারেন।তবে সবচেয়ে ভালো হয় সকালে ঘুম থেকে উঠে খেলে। এছাড়াও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘন্টা আগে চিয়া সিড খাওয়া যেতে পারে।যারা ব্যায়াম করেন তারা ব্যায়াম করার এক ঘন্টা পর চিয়া সিড খেতে পারেন। তাছাড়া দিনের বিভিন্ন সময়ে কিছুটা 'খালি পেট' অবস্থায় এটি খেতে পারেন।

    চিয়া সিড কিভাবে খাবেন

    এক গ্লাস পানিতে এক থেকে দুই চা চামচ চিয়া সিড ভেজাতে হবে। ন্যূনতম ৩০ মিনিট এটি ভিজিয়ে রাখতে হবে। চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ নেই। এর সাথে এক স্লাইস লেবু এবং এক চিমটি 'পিঙ্ক সল্ট' মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া চিয়া সিড বিভিন্ন প্রকার সালাদের সাথে অথবা বিভিন্ন ফলের জুসের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। মূলত চিয়া সিড শুকনো ছাড়া যে কোনোভাবেই খেতে পারেন।

    চিয়া সিডের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

    চিয়া সিডে বেশকিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়-

    👉চিয়া সিড খাবার সময় গলায় আটকে যাবার সম্ভাবনা থাকে
    👉অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে রক্তচাপ অত্যাধিক কমে যেতে পারে
    👉পেটে হালকা ব্যথা হতে পারে
    👉বমি বমি ভাব আসতে পারে

    লেখকের মন্তব্য

    চিয়া সিডে অত্যাধিক পুষ্টিগুণ থাকায় ইতিমধ্যে চিয়া সিড সুপার ফুড হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা রকম সমস্যা রোধে চিয়া সিড বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আমাদের খাদ্য তালিকায় যে খাবারগুলো আমরা প্রতিনিয়ত খেয়ে থাকি তার বেশির ভাগই ভেজাল যুক্ত হয়। তাই আমাদের খাদ্য থেকে যতটুকু পুষ্টি পাবার কথা ততটুকু আমরা পাইনা, উল্টো ভেজাল খাবার খাওয়ার জন্য বিভিন্ন রোগ ব্যাধি শিকার হই। আমাদের বিভিন্ন খাদ্য ঘাটতি পূরণে চিয়া সিড একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান হতে পারে। এর দ্বারা আমরা আমাদের অপ্রাপ্ত পুষ্টিগুলো পূরণ করতে পারি। সেই সাথে সুস্থভাবে জীবন যাপনে এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারি।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url