পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয়
পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন। পিরিয়ডের সময় প্রচন্ড পরিমাণে পেট ব্যাথা হয় পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয় সম্পর্কে না জেনে থাকার কারণে আমরা এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুঁজে পাই না। এই আর্টিকেলে পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
সূচিপত্রঃ পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয়
- পিরিয়ডের ব্যথা কোথায় হয়
- পিরিয়ডের ব্যথা কতক্ষণ স্থায়ী থাকে
- পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয়
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- আমাদের শেষ কথা
পিরিয়ডের ব্যথা কোথায় হয়
আমরা আজকের এই আর্টিকেলে পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয় সম্পর্কে জানব এর আগে আমাদের জেনে নিতে হবে পিরিয়ডের ব্যথা কোথায় হয়? কারণ যে সকল নারীদের প্রথম পিরিয়ড হয়ে থাকে সাধারণত তারা জানে না যে পিরিয়ডের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে আমাদেরকে নিজেদের সুরক্ষার জন্য পিরিয়ডের ব্যথা কোথায় হয় তা জেনে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হওয়ার ১৫ টি কারণ - অতিরিক্ত মাসিক বন্ধ করার ১০টি উপায়
আমরা কম বেশি সকলেই পেট কামড়ানোর মতো ব্যথা অনুভব করি মাঝেমধ্যেই। পিরিয়ডের ব্যথা অনেকটাই এরকম। পিরিয়ডের ব্যথা আমাদের তলপেটে হয়ে থাকে কিন্তু মাঝেমধ্যে এই ব্যথা আমাদের কোমরে এবং উরুতে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় পেটের ব্যাথা প্রচন্ড পরিমাণে কামড়ে ধরা এবং খিচ ধরার মতো যাওয়া আসা করে।
প্রতিবার যে একই রকম ব্যাথা হবে এমনটা নয়। এক এক পিরিয়ডের সময় একেক রকম ব্যথা হতে পারে। কোন সময় প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা হতে পারে আবার কোন সময় হালকা পরিমাণে ব্যথা হতে পারে। তবে মাসিকের ব্যথা সব সময় তলপেটে বেশিরভাগ হয়ে থাকে। তলপেট থেকে ধীরে ধীরে চারদিকে এই ব্যাথা ছড়িয়ে পড়ে।
পিরিয়ডের ব্যথা কতক্ষণ স্থায়ী থাকে
অনেক নারীদের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের ব্যথা প্রচন্ড পরিমাণে হয়ে থাকে। সাধারণত তারা তখন পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাই। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই জানে না যে পিরিয়ডের ব্যথা কতক্ষণ স্থায়ী থাকে। তবে আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি যে সবার ক্ষেত্রে পিরিয়ডের ব্যথা একই সময়ে স্থায়ী থাকে না।
আমরা জানি যে পিরিয়ড শুরু হওয়ার সময় পিরিয়ডের ব্যথা শুরু হয়। সাধারণত এই সময় পেটে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা অনুভূত হয়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় যে পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগেই ব্যথা শুরু হয়ে গেছে। পিরিয়ড এর ব্যথা সাধারণত ৪৮ ঘন্টা থেকে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে এর থেকে বেশি সময় পর্যন্ত স্থায়ী থাকতে পারে।
আমরা যদি এটিকে দিনে হিসাব করি তাহলে পিরিয়ডের ব্যথা ৩-৪ দিন স্থায়ী থাকতে পারে। সাধারণত পিরিয়ডের সময় যখন বেশি পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয় সাধারণত তখন পিরিয়ডের ব্যথা শুরু হয়। যাদের ক্ষেত্রে প্রথম পিরিয়ড শুরু হয় সাধারণত তাদের ক্ষেত্রে এই ব্যথা দীর্ঘদিন পর্যন্ত থাকতে পারে। সাধারণত এটি কোন রোগের কারণে ব্যথা হয় না এটি প্রাকৃতিকভাবে রক্তক্ষরণের জন্য হয়ে থাকে।
পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয়
প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে পিরিয়ড একটি কমন বিষয়। সাধারণত প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সময় মেয়েদের পিরিয়ড হয়ে থাকে। সাধারণত এই সময় নারীদের হরমোন পরিবর্তন হয় এবং প্রচন্ড পরিমাণে পেট ব্যথা করে এছাড়া শারীরিক আরো পরিবর্তন আসে। কিন্তু অনেক নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় পিরিয়ডের ব্যথা অনেক বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত তারাই পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাই।
আরো পড়ুনঃ যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - নিয়মিত মাসিক শুরুর উপায়
- হট ব্যাগ ব্যবহার
- আদা চা খাওয়া
- ক্যামোমাইল টি
- ব্যথার ওষুধ সেবন করা
হট ব্যাগ ব্যবহার - আপনি যদি পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে চান তাহলে আপনার জন্য খুবই কার্যকরি একটি উপায় হল হট ব্যাগ ব্যবহার করা। সাধারণত এই উপায় আপনি শরীরের যেকোনো ব্যথা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেন। প্রথমে আপনাকে একটি ব্যাগের ভেতরে গরম পানি ভরে নিতে হবে এরপরে শরীরের যে অংশে ব্যথা হয় সেই অংশে ব্যাগ লাগাতে হবে।
আদা চা খাওয়া - পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে আদা চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই আপনি যদি পিরিয়ডের প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আদা চা খেতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি পারেন তাহলে এমনি আদার চিবিয়ে খেতে পারেন এটি আপনার বমি ভাব দূর করবে এবং পিরিয়ডের ব্যথা কমবে।
ক্যামোমাইল টি - আদা চা এর মত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো ক্যামোমাইল টি। এই চায়ের মধ্যে রয়েছে আন্টি ইনফ্লিমেন্টরি এছাড়া আরো বেশ কিছু উপাদান যা আমাদের পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই আপনার অসহ্য পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে আপনি ক্যামোমাইল টি নিয়মিত খেতে পারেন।
ব্যথার ওষুধ সেবন করা - আমরা আমাদের শরীরের যেকোনো ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল খেয়ে থাকি। কিন্তু পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল কোন কাজে দেয় না। এক্ষেত্রে আপনি বেশ কিছু পেইন কিলার ওষুধ খেতে পারেন। তবে যে কোন ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
আমরা ইতিমধ্যেই পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয় সম্পর্কে বেশ কিছু উপায় জেনেছি। তবে বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে পারবেন। যদি আপনার প্রচন্ড পরিমাণে পিরিয়ডের ব্যথা হয় তাহলে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
পেঁপে খেতে পারেন - পেঁপের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। পিরিয়ডের সময় ব্যথা কমানোর জন্য নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেতে থাকুন। বিশেষ করে কাঁচা পেঁপে আপনার পিরিয়ডের ব্যথা কমিয়ে দেবে।
অ্যালোভেরা রস - সাধারণত আমরা জানি যে অ্যালোভেরা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য এবং আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। কিন্তু আপনি যদি আপনার পিরিয়ডের ব্যথায় ভুগে থাকেন এবং এই ব্যথা কমাতে চান তাহলে এলোভেরা রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ মাসিকের ব্যথা কমানোর ৫টি উপায় - মাসিকের ব্যথা কমানোর ৪টি ওষুধ
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন - আপনার পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি। অনেক সময় শরীরে যদি পানি শূন্যতা দেখা দেয় তাহলে পিরিয়ডে আরও বেশি ব্যথা করতে পারে। তাই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
নিয়মিত শরীর চর্চা করুন - আপনি যদি পিরিয়ডের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্যে থাকুন। কারণ আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে শরীরচর্চা করার কোন বিকল্প নেই। শরীরে যেকোনো ব্যথা কমাতে এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে এছাড়া পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে নিয়মিত শরীর চর্চা করুন।
আমাদের শেষ কথাঃ পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয়
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে পিরিয়ডের ব্যথা কোথায় হয়? পিরিয়ডের ব্যথা কতক্ষণ স্থায়ী থাকে? পিরিয়ডে পেট ব্যথা দূর করতে করণীয়, পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু নারীরা এ সমস্যায় প্রতিনিয়ত ভোগে থাকে তাই প্রতিটি নারীর ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো জেনে নেওয়া উচিত। আশা করি আপনারা বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ২০৭৯১
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url