অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায়
অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায় জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবো। অনিয়মিত মাসিক হলে মেয়েদের একটি সমস্যা।অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায় জানা রাখা অত্যন্ত জরুরী। আজকের এই আর্টিকেলে অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায় আলোচনা করা হবে।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায় জেনে নেওয়া যাক।
কনটেন্ট সূচিপত্রঃ অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায়
- অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায়
- অনিয়মিত মাসিকের লক্ষণ
- অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার সহজ উপায়
- অতিরিক্ত মাসিক বন্ধ করার ঘরোয়া উপায়
- উপসংহার
অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায়
নিয়মিত পিরিয়ড হওয়া মেয়েদের সুস্থতার লক্ষণ। কিন্তু যদি অনিয়মিত পিরিয়ড হয় তাহলে এটি সাধারণত বেশ কিছু সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে মেয়েদের স্বাস্থ্যের ওপর। অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায় রয়েছে আমাদের অবশ্যই এ বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিত। অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায় জানা থাকলে খুব সহজেই এ সমস্যার সমাধান করা যায়।
আরো পড়ুনঃ যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - নিয়মিত মাসিক শুরুর উপায়
- নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খাওয়া
- অ্যালোভেরা জেল খাওয়া
- আপেল সিডার ভিনেগার
- নিয়মিত শরীর চর্চা করা
- কাঁচা হলুদ খাওয়া
- আদা চা সেবন করা
- দারুচিনি
- ফল এবং শাক সবজির জুস
নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খাওয়া -- পিরিয়ড নিয়মিত করতে কাঁচা পেঁপে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার জরায়ুর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করবে এবং আপনার নিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা সমাধান করবে।
অ্যালোভেরা জেল খাওয়া -- আমরা জানি যে আমাদের ত্বক এবং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো অ্যালোভেরা জেল। আপনি যদি মাসিকের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে অ্যালোভেরা জেল নিয়মিত খেতে পারেন। অ্যালোভেরা জেল এর উপাদানগুলো অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
আপেল সিডার ভিনেগার -- আমাদের রক্তে যদি ইনসুলিন অর্থাৎ সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি পায় তাহলে অনিয়মিত মাসিক এই সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। আপনি যদি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপেল সিডার ভিনেগার খেতে পারেন। এটি নিয়মিত খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ইনসুলিন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে যার ফলে মাসিক নিয়মিত হয়।
নিয়মিত শরীর চর্চা করা -- নিজের শরীরকে সুস্থ রাখার অন্য কোন উপায় নেই শরীরচর্চা ছাড়া। যদি আপনি সুস্থ থাকতে চান বিশেষ করে নারীরা যদি অনিয়মিত মাসিক এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাই তাহলে নিয়মিত শরীর চর্চা করবে।
কাঁচা হলুদ খাওয়া -- আমরা জানি কাঁচা হলুদ সাধারণত মশলা জাতীয় উপাদান। তবে এই মসলা জাতীয় উপাদানের অনেক বেশি উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে নারীদের মাসিকের সমস্যার সমাধান করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে হলুদ। আমাদের শরীরে হরমোন এর ব্যালেন্স সঠিক রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে এটি। এছাড়া জরায়ুর মাংসপেশি সংকোচন প্রসারণ এর সাহায্য করে থাকে।
আদা চা সেবন করা -- হলুদ এর মত আদা হচ্ছে মসলা জাতীয় একটি উপাদান। তবে এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মাসিকের সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে এটি। আপনি যদি প্রতিদিন আদা দিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন তাহলে মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
দারুচিনি -- যে সকল উপাদান আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোর মধ্যে দারুচিনি অন্যতম একটি। মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক এই সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে দারুচিনি। আপনি যদি লেবুর রসের সাথে দারুন নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার পিরিয়ড নিয়মিত করাবে।
ফল এবং শাক সবজির জুস -- আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ফল এবং সবুজ শাকসবজি অনেক গুরুত্বপূর্ণ খাবার। বিশেষ করে নারীদের যখন পিরিয়ড হয় তখন এই খাবারগুলো খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আপনি যদি অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করতে চান তাহলে ফল এবং শাকসবজির জুস খেতে পারেন।
অনিয়মিত মাসিকের লক্ষণ
অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনেছি। তবে বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে সাধারণত এই লক্ষণগুলো দেখে আমরা অনিয়মিত মাসিক হচ্ছে এ বিষয়গুলো বুঝতে পারব। নিয়মিত মাসিক হলো নারীদের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তবে যদি সময়ের পরে মাসিক হয় তাহলে এটিকে অনিয়মিত মাসিক বলে। চলুন অনিয়মিত মাসিকের লক্ষণ জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ মাসিকের ব্যথা কমানোর ৫টি উপায় - মাসিকের ব্যথা কমানোর ৪টি ওষুধ
১। যেকোনো বয়সের নারীদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। যদি কোন মেয়ের মাসিক ২১ দিনের কম এবং ৩৫ দিনের বেশি সময় ধরে হয় তাহলে এটিকে অনিয়মিত মাসিক বলা হয়।
২। অনিয়মিত মাসিক এর আরো একটি অন্যতম লক্ষণ হল অতিরিক্ত পরিমাণের রক্তক্ষরণ হতে পারে।
৩। অনিয়মিত মাসিক হলে সময়কাল ৭ দিন অথবা এর থেকে বেশি হতে পারে।
৪। অনিয়মিত মাসিক এর ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে পেট ব্যথা এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হতে পারে।
৫। অনিয়মিত মাসিক হলে মেয়েরা অনেক বেশি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং একটুতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার সহজ উপায়
প্রাপ্তবয়স্ক এবং কিশোরী নারীদের ক্ষেত্রে যেকোনো বয়সের নারীদের যদি সময়মতো পিরিয়ড না হয় তাহলে এটিকে অনিয়মিত পিরিয়ড বলা হয়। অনিয়মিত পিরিয়ড হলে মহিলাদের শারীরিক বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয়ে থাকে। যদি মাসিক নিয়মিত না হয় তাহলে নারীরা অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে আমাদেরকে অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার সহজ উপায় গুলো জেনে রাখতে হবে।
টক জাতীয় ফল খাওয়া -- আপনি যদি নিয়মিত মাসিকের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে নিয়মিত টক জাতীয় ফল খেতে হবে। টক জাতীয় ফল এর মধ্যে রয়েছে তেতুল মালটা জলপাই ইত্যাদি। এই ফলগুলো মাসিক নিয়মিত করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এই ফলগুলোর সাথে সামান্য পরিমাণে লবণ চিনি অথবা মরিচ মিশিয়ে খেতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা -- অনেক সময় নারীরা স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করে না যার ফলে তাদের অনিয়মিত মাসিক এ ধরনের সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করে যে সকল নারীদের মেনোপজের স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে হবে। কারণ স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করলেই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
নিয়মিত তিল খাওয়া -- আমরা সকলেই কমবেশি জানি যে তিল হল একটি উপকারী খাবার। এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শরীরের সব ধরনের সমস্যা দূর করতে কার্য করে ভূমিকা রাখে। এটি নারীদের অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করতে সাহায্য করে। এছাড়া হরমোনের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে ও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
অতিরিক্ত মাসিক বন্ধ করার ঘরোয়া উপায়
অনেক কিশোর কিশোরীরা সাধারণত অনিয়মিত মাসিক এই সমস্যায় ভুগে থাকে। বিশেষ করে যে সকল নারীরা অনেক বেশি দুশ্চিন্তা করে সাধারণত তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বেশি হয়। এছাড়া যাদের ক্ষেত্রে হরমোন জনিত সমস্যা রয়েছে তাদেরও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা ইতিমধ্যেই অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
১। আপনি যদি অনিয়মিত মাসিক এই সমস্যায় ভুগে থাকেন অথবা অতিরিক্ত মাসিক হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে উপরোক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হবে এছাড়া অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেওয়া যাবে না।
২। কখনোই হঠাৎ করে শরীরের ওজন অতিরিক্ত পরিমাণে কমানোর চেষ্টা করতে হবে না। যদি শরীরের ওজন হঠাৎ করে কমে যায় তাহলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হওয়ার ১৫ টি কারণ - অতিরিক্ত মাসিক বন্ধ করার ১০টি উপায়
৩। পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। যদি অতিরিক্ত পরিমাণে মাসিক হয়ে থাকে তাহলে এটিকে বন্ধ করতে আমাদেরকে পুষ্টিকর খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
৪। যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল অথবা ইনজেকশন ব্যবহার করে সাধারণত তাদেরকে এই বিষয়গুলো বাদ দিতে হবে। কারণ এটি মেয়েদের মাসিক অনিয়মিত করতে পারে।
৫। যদি কোন নারীর জটিল কোন সমস্যা যেমন জরায়ুতে টিউমার এছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায়ঃ উপসংহার
অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ঘরোয়া উপায়, অনিয়মিত মাসিকের লক্ষণ, অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার সহজ উপায়, অতিরিক্ত মাসিক বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আমার প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যেহেতু অনেক নারী অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় ভুগে থাকে তাই এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরী।
আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে অবশ্যই সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন। এই ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। ২০৮৭৬
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url